স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ’ নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে বঙ্গবাজারের পোড়া কাপড় থেকে অলংকার তৈরির কিছু ছবি পোস্ট করে বিতর্কের মুখে পড়েছে। এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে একুশে পদকজয়ী সংগঠনটি।
আজ রোববার দুপুরে এ সংক্রান্ত এক ফেসবুক পোস্টে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সংস্থাটি।
ফেসবুক পোস্টে বিদ্যানন্দ লিখেছে, সাম্প্রতিক (সময়ে) বিদ্যানন্দ পেজে পোস্ট হওয়া একটি কোলাজ ছবিতে ভুল ছবি সংযুক্ত হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের হেড অব কমিউনিকেশন সালমান খান ইয়াসিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ইতিমধ্যে আমরা দুই কোটি টাকার একটি ফান্ড সংগ্রহ করেছি। সেই সঙ্গে আমরা ‘বার্ণ কালেকশন’ নামে একটি ক্যাম্পেইন করি। পুড়ে যাওয়া কাপড়কে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটাই ছিল উদ্দেশ্য। বিদ্যানন্দ সব সময়ই এমন কিছু নিয়ে চিন্তা করে যা অন্য কেউ কখনও চিন্তা করেনি।’
ভুলের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রজেক্ট টিম বঙ্গবাজারের পোড়া কাপড় থেকে অলংকার বানানোর জন্য ইন্টারনেট থেকে বেশ কিছু স্যাম্পল ছবি ডাউনলোড করে। স্যাম্পল ছবি দেখে বানানো প্রোডাক্টগুলোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়া টিমকে পাঠানোর সময় ভুলবশত ইন্টারনেটের রেফারেন্সিয়াল ছবিগুলোও পাঠিয়ে দেয়। সোশ্যাল মিডিয়া টিম যথাযথ ভেরিফিকেশন ও অনুমোদন ছাড়া ছয়টি ছবির একটি কোলাজ তৈরি করে, যেখানে দু’টি ছবি বিদ্যানন্দের হলেও বাকি চারটি ছবিই ইন্টারনেটের রেফারেন্সিয়াল ছবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ভুল আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পোস্টটি ডিলিট করি এবং ইন্টারনাল ইনভেস্টিকেশন করি। আমরা ভুল ছবি কমিউনিকেট করার দায়ভার নিচ্ছি এবং পেজের সম্মানিত শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।’
বিদ্যানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা অনু বলেন, ‘আমরা তো আসলে প্রফেশনাল না, এ কাজগুলো আমরা ইউটিউব দেখেই শিখেছি। এই পোড়া কাপড়গুলো দিয়ে কি কি করা যায় সেই আইডিয়া আমরা নেট থেকেই নিয়েছি। এই আমাদের স্কুলে বাচ্চাদের শেখানোর ক্ষেত্রেও আমরা ইউটিউব দেখে অনেক কিছুই তাদের শিখাই। যেমন ধরুন কিভাবে কাগজ দিয়ে ফুল বানাতে যায়, কিভাবে কাগজ দিয়ে পাখি বানাতে হয় বা কাপড় দিয়ে কিভাবে তারা বিভিন্ন কিছু তৈরি করবে এগুলো সবই আমরা শিখাই। বিভিন্ন পেজ থেকেই আমরা শিখি এবং শেখাই। এই বিষয়টাও এমনভাবেই হয়েছে। আমরা আমাদের কাজগুলোর ছবিও তুলেছি, তাদেরগুলোও ছিল। এখন এটা ভুলে পোস্ট হয়ে গেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তা ডিলিট করেছি। আমরা যে উৎসাহ নিয়ে কাজগুলো করেছি সেখানে আমরা অনেক বেশি আহত হয়েছি। উৎসাহে ভাটা পড়েছে।’
একুশে পদকজয়ী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি এ সংক্রান্ত এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছে, বিদ্যানন্দের প্রতি আপনাদের আবেগ, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাকে আমরা সম্মান করি। তাই ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ভুল না হয়, সে ব্যাপারে যত্নশীল ও আন্তরিক হওয়ার চেষ্টা করবো।
এর আগে বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে ‘বঙ্গবাজারের পোড়া কাপড়ের তৈরি অলংকার’ ক্যাপশনে ৬টি ছবি পোস্ট করা হয়। এর মধ্যে চারটি ছবি গত ৯ মার্চ একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।