জাতীয়

ইবি শিক্ষার্থীকে বৈধ সিট থেকে নামিয়ে দিল ছাত্রলীগ

(Last Updated On: )

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চার ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মাহাদী হাসান নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার চার ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মাহাদী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত চার ছাত্রলীগ কর্মী হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সিদ্দিক, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তরুণ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাজু। তারা ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগে মাহাদী হাসান বলেন, প্রথমে আমি হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে একজনের অতিথি হয়ে থাকতাম। পরে আমাকে ৪২৮ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। বরাদ্দকৃত কক্ষে কিছুদিন ধরে অবস্থান করছি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমি হলের বাইরে অবস্থান করছিলাম। তখন সিদ্দিক ভাই, তরুণ ভাই, ফাহিম ফয়সাল ভাই ও রাজু ভাই আমাকে হলের ৪২৭ নম্বর কক্ষে আসতে বলেন। হলে ফিরে দেখি আমার জিনিসপত্র রুমের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে আমি ৪২৭ নম্বর কক্ষে গেলে ফাহিম ভাই আমাকে বলেন- তুই কোন কক্ষে থাকিস? আমি বলি- ৪২৮ নম্বর কক্ষে। তখন ফাহিম ভাই বলেন- আগে কোথায় ছিলি? আমি বলি ৩০৮ নম্বর কক্ষে মেহেদী হাসান তানভীরের অতিথি হিসেবে। এখন আমার নামে ৪২৮ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ হয়েছে। আমি এখানেই থাকছি। আমি এটা বলার পর রাজু ভাই আমাকে ধমক দিয়ে বলে তুই কে? তোকে আগে কখনো হলে দেখিনিতো। কে তোরে হলে তুলেছে? আর আবাসিকতার কাহিনী বাদ দে। আমরা যা বলবো- হলে তাই হবে। তখন তরুণ ভাই বলেন- আমারে চিনিস তুই, আমি কে? এখন ভালোই ভালোই ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা। ৩০৮ নম্বরে থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমরা জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা বলার পর রুমের বাইরে ফেলে দেওয়া আমার বই, খাতা, তোশক, বালিশসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন- এইখানে তোর সবকিছু আছে, নিয়ে চলে যাস। এ ঘটনার পর আমি প্রভোস্ট বরাবর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফাহিম ফয়সাল বলেন, ‘সমঝোতার ভিত্তিতে মাহাদীকে ৩০৮ নম্বর রুমেই থাকতে বলি। কিন্তু সে মানে নাই বিষয়টা। সে ৪২৮ নম্বর কক্ষে উঠার মতামত দেয়। আমরা বলি এই সিটে যেহেতু একজন উঠছে, সেই ক্ষেত্রে তুমি আগের রুমেই থাকো। অভিযোগে যা বলা হয়েছে, তা সবই মিথ্যা।’

এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ৪২৮ নম্বর কক্ষে আবাসিকতা দিয়েছিলাম। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’

এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ৪২৮ নম্বর কক্ষে আবাসিকতা দিয়েছিলাম। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’