করোনাভাইরাস পুরো পৃথিবীকে এলোমেলো করে দিচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। হারিয়ে যাচ্ছে কোনো না কোনো পরিবারের প্রিয় কোনো মানুষ। একেকটি মৃত্যুতে থমকে যাচ্ছে এক-একটি বেঁচে থাকার স্বপ্ন।
দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে মানুষ করোনার ভয়াবহতার সঙ্গে বসবাস করছেন। করোনা সংক্রমণ কমাতে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তবু থামছে না মৃত্যু।
চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সংস্পর্শে এলে যে কেউ সংক্রামিত হতে পারেন। তাই করোনা থেকে বাঁচতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার করা খুবই জরুরি।
তবে একটি মাস্ক বেশি দিন ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে না। করোনা সংক্রমণ রোধে বাজারে অনেক রকমের মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটি সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক বা এন–৯৫ মাস্ক অথবা কাপড়ে তৈরি মাস্ক, যা-ই হোক না কেন, সব ধরনের মাস্ক ব্যবহারের একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। কোন মাস্ক কীভাবে, কতদিন ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়ে দেশের বেশির ভাগ মানুষের নেই স্পষ্ট কোনো ধারণা।
করোনার এই বাড়বাড়ন্তির সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের জরুরি শিশু তহবিল সংস্থা (ইউনিসেফ) ধরন বুঝে মাস্ক ব্যবহার সম্পর্কিত কিছু টিপস দিয়েছে।
* সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক মূলত হাসপাতালে রোগীদের আশপাশে থাকা চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যবহার করেন। এই মাস্ক হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগী উভয়কে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। সার্জিক্যাল ফেস মাস্কের নীল ও সাদা দুটি অংশ থাকে। নীল অংশটি ওয়াটারপ্রুফ। আর সাদা অংশটি ফিল্টার, যা ভেদ করে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না। সুস্থ ব্যক্তিরা রোগ-জীবাণুর হাত থেকে রক্ষার জন্য সাদা অংশ বাইরে এবং নীল অংশটি ভেতরের দিকে রেখে ব্যবহার করবেন। আর ঠান্ডাজনিত কোনো রোগে কেউ আক্রান্ত হলে নীল অংশটি বাইরে ও সাদা অংশটি ভেতরে রেখে ব্যবহার করবেন। এতে মুখের ক্ষতিকর জীবাণু বাইরে যেতে পারবে না। এই মাস্ক চার থেকে আট ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।
* সার্জিক্যাল ফেস মাস্কের পাশাপাশি বাজারে এন–৯৫ মাস্ক পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের মতে, এই মাস্ক করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তবে এই মাস্ক দুই থেকে চার দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।
* এ ছাড়া এক ধরনের কাপড়ের মাস্ক বাজারে পাওয়া যায়। এই মাস্ক ব্যবহারের পর গরম পানিতে ডিটারজেন্টে ধুয়ে ব্যবহার করা উচিত। কাপড়ের মাস্ক কয়েক দিন ব্যবহারের পর সেটি পরিবর্তন করা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, করোনা প্রতিরোধে কাপড়ের মাস্ক তিন স্তরবিশিষ্ট হওয়া উচিত।
* এই কয়েক ধরনের মাস্কের পাশাপাশি বাজারে এক স্তরের মাস্কও পাওয়া যায়। সহজলভ্য এই মাস্ক ধুলাবালি থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারলেও রোগ প্রতিরোধে তেমন কাজ করে না। এই মাস্ক একদিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।