আন্তর্জাতিক

১১ সেপ্টেম্বরই শপথের দিন বেছে নিল তালেবান


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

আফগানিস্তানে নতুন সরকার আগামীকাল শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) শপথ নিতে যাচ্ছে। কাবুল দখলের ২২ দিন পর তালেবান অন্তবর্তী সরকারের ঘোষণা দেয়। শপথ অনুষ্ঠানে চীন ও ইরানসহ ছয় দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

তালেবান বলেছে, ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তালেবান সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করলে ওয়াশিংটন তাদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে পারে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে যাত্রীবাহী বিমান নিয়ে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। ওই ঘটনায় কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান। এ ঘটনার জন্য মার্কিন সরকার জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদাকে দায়ী করে গোষ্ঠীর নেতা বিন লাদেনকে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তৎকালীন তালেবান সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

কিন্তু তালেবান নেতৃত্ব তখন ঘোষণা করে-তারা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়েছেন বলে কিছুতেই আমেরিকার হাতে তাকে তুলে দেবেন না। এরপর ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে দেশটি দখল করে নেয় আমেরিকা। পতন ঘটে তালেবান সরকারের। ওই ঘটনার ২০ বছর পর চলতি বছর ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে সমূলে আমেরিকা উৎখাত হয়।

এর আগে ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান।

তালেবানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, চীন, কাতার, তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইরানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে যেসব দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেসব দেশের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তালেবানের একজন সিনিয়র সদস্য জানান, নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথগ্রহণের জন্য শনিবার দিন ধার্য করা হয়েছে।

নারীদের বিক্ষোভের সংবাদ প্রচার করায় দুই সাংবাদিককে মারধর: কাবুলে নারীদের বিক্ষোভের সংবাদ প্রচার করায় আফগানিস্তানে দুই সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, মঙ্গলবার দুই সাংবাদিক তালেবানের নিরাপত্তা বাহিনীর বেদম মারধরের শিকার হয়েছেন। কাবুলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এতিলাত-ই-রোজের দুই সাংবাদিক তাকি দারিয়াবি এবং নিমাত নাকবিকে আটক করে তালেবান। পরে তাদের মারধর করা হয়। তালেবান শাসনের বিরোধিতা করে কাবুলে আয়োজিত নারীদের বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করেন তারা।

এতিলাত-ই-রোজের খবরে বলা হয়-তালেবান কর্তৃপক্ষ ওই দুই সাংবাদিককে আটক করে কাবুলের একটি থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের আলাদা রাখা হয়। আর তার দিয়ে তাদের মারাত্মকভাবে পেটানো হয়। অবশ্য বুধবার দুজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তারা মুখ ও পিঠে আঘাতের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

তালেবানের অধীনে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ : তালেবানের অধীনে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। আফগান নারীদের অধিকারকে সম্মান করার যে প্রতিশ্রুতি তালেবান করেছিল তা ইতোমধ্যেই তারা উপেক্ষা করছে বলে দাবি করেছেন আফগানিস্তানে জাতিসংঘের নারী প্রতিনিধি অ্যালিসন ডাভিডিয়ান।

বুধবার নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অ্যালিসন ডাভিডিয়ান বলেন, তালেবান নারী অধিকার নিয়ে বারবার একই বিবৃতি দিচ্ছে। তারা বলছে, ইসলামের আলোকে তারা নারীদের সম্মান জানাবে। কিন্তু প্রতিদিনই আমরা নারী অধিকার নিয়ে বিপরীত খবর পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে পুরুষ সঙ্গী ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি কিছু প্রদেশে নারীদের কাজে যাওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভের ছাড়পত্রের জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে আবেদন করতে হবে : তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে কাবুলসহ দেশটির একাধিক স্থানে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হয়েছে। এখন আফগানিস্তানে কেউ বিক্ষোভ করতে চাইলে তার ছাত্রপত্র পেতে আবেদন করতে বলেছে তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার এনডিটিভি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিক্ষোভের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়-বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার সমস্যা এড়াতে কেউ বিক্ষোভ করতে চাইলে তার ছাড়পত্রের জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে আবেদন করা উচিত।

নতুন মন্ত্রিসভায় কোনো নারী সদস্য না থাকার প্রতিবাদে কাবুলসহ একাধিক স্থানে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।

রাজপথে বিক্ষোভ করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সব সরকারি অফিস খুলছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রতিবাদসংক্রান্ত আইনের ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কারও প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ করা উচিত নয়।