আন্তর্জাতিক

স্পিকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন হাসিনা: দ্য হিন্দু

(Last Updated On: )

ছাত্রজনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদচ্যুত হয়ে গতবছরের আগস্টের শুরুতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তবে সাবেক এই স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের তৎকালীন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করেছিলেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন এবং সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে ছিল; যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।

এদিকে, ভারতীয় এই পত্রিকায় একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি দাবি করেছেন, আমরা সে সময়ে গণভবনে উপস্থিত ছিলাম এবং ক্রমাগত এই পরিকল্পনাই করছিলাম যে- কীভাবে ছাত্রবিক্ষোভের সমাধান করা যায়। তবে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন- (সাবেক) প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক পদত্যাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সেই কারণেই লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দাবি করেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনা চীন সফরে যাওয়ার পর ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন সর্বাত্মক আন্দোলন তীব্র গণবিক্ষোভে রূপ নেয়।

ছাত্ররা ‘এক দফা- শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ দাবি করলে মহিবুলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করতে বলেছিলেন হাসিনা। পরে অবশ্য ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করলে তিনি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান এবং শেষ পর্যন্ত আত্মগোপনেই থাকেন। হাসিনা সরকারের সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোভাবের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

উল্লেখ্য, গতবছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পা‌লিয়ে যান শেখ হাসিনা। তি‌নি বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া গুমকাণ্ড এবং জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকায় সম্প্রতি হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ।‌ এর আগে গতবছরের আগস্টেই হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সকল মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যের লাল পাসপোর্ট (কূটনৈতিক পাসপোর্ট) বাতিল করা হয়।