চট্টগ্রাম

সাংবাদিকরা রাষ্ট্র ও সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে রয়েছে সাংবাদিকদের বিশেষ ভূমিকা। তারা সমাজের অগ্রসর অংশ। রাষ্ট্র ও সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। সমাজের অনুন্মোচিত বিষয়গুলো উন্মোচিত করে। সমাজ, রাষ্ট্র–সমাজপতি যেদিকে তাকান সেদিকে তাদের দৃষ্টি আবদ্ধ করেন। এমন অনেকগুলো বিষয় আছে যেগুলো রাষ্ট্র দেখে না। রাষ্ট্র পরিচালনার সাথে যারা যুক্ত, তারাও দেখে না। কিংবা সমাজ যারা চালায়, তারাও দেখে না, দেখার প্রয়োজনও মনে করে না। এমন অনেক বিষয় সাংবাদিকরা উন্মোচিত করে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ৬২ বছর পূর্তি উৎসব এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকরা সরকারের ভুলত্রুটি তুলে ধরবেন, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। কাজকে পরিশুদ্ধভাবে করার ক্ষেত্রে সেটি সহায়ক হয়। অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু প্রতিবেদন এমন ভাবে হয় সেগুলো দেশের জন্য ক্ষতিকারক। ড. হাছান বলেন, আসলে বাংলাদেশে বিএনপি জামাতসহ কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দল আছে, আর কিছু গোষ্ঠি আছে, পদ্মাসেতু দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ওপারে গিয়ে বলে, দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেস দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে বলে এসব শুধু বড় লোকের জন্য। এলিভেটেড এক্সপ্রেস দিয়ে কিন্তু পাবলিক বাসও চলে।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে গত ১৫ বছরে প্রতিটা বাজেট বাস্তবায়নের হার হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৭ শতাংশ। আজকে সংসদে প্রায় আট লক্ষ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ হয়েছে। বিএনপিসহ কিছু গোষ্ঠি আছে তারা চোখে ভালো কিছু দেখেন না। প্রতিবার বাজেট পেশ করার পর আপনারা দেখবেন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় এই বাজেট গণবিরোধী, গরীব মারার বাজেট, এই বাজেটে কোনো উপকার হবে না, এই বাজেট বাস্তবায়ন যোগ্য নয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাজেটের আকার গত ১৫বছরে সাড়ে ১১গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় সাড়ে পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপির আকার প্রায় ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং বাংলাদেশে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা জনগোষ্ঠি ছিল ৪১ শতাংশ। সেখান থেকে ১৮.৭ শতাংশে নেমেছে। অতিদারিদ্রতা ২২শতাংশ ছিল, সেখান থেকে সাড়ে ৫শতাংশে নেমেছে।
তিনি বলেন, বাজেট যদি গরীবের উপকারে না আসত, তাহলে দারিদ্রতা ও অতিদারিদ্রতা কমত না। মানুষের আয় সাড়ে ৫গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ডলারের অংকে, টাকার অংকে আরো বেশি। এটি সম্ভবপর হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের বাস্তবসম্মত বাজেট প্রণয়ন এবং সেই বাজেট বাস্তবায়নের কারণে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবকিছুতে না বলার যে অপসংস্কৃতি এটি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য বাধা।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।
সভাপতির বক্তব্যে সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের স্বার্থে এবং সাংবাদিকদের কল্যাণে আরো নানা উদ্যোগ গ্রহণে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
স্বাগত বক্তব্যে দেবদুলাল ভৌমিক বলেন, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এ আয়োজন সবার মধ্যে আরো বিশাল উৎসাহ–উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। যা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অগ্রযাত্রাকে আরো গতিশীল করবে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে এই প্রতিষ্টানের বর্তমান অবস্থান। তাদের সন্মাননা জানাতে পেরে আজকের উদ্যোগ স্বার্থক মনে করছি।
সন্মাননা প্রাপ্ত সভাপতিরা হলেন- মতিউর রহমান (সিএসপি), কাজী জালালউদ্দিন আহমদ (সিএসপি), এম. নুরুল ইসলাম, বি.এ. আজাদ ইসলামাবাদী, এম. এ. মালেক, আব্দুল্লাহ আল ছগীর, আতাউল হাকিম, এম. ওবায়দুল হক, মুহাম্মদ ইদ্রিস, আবু সুফিয়ান, আখতার উন নবী, আলহাজ্ব আলী আব্বাস, কলিম সরওয়ার।
সন্মাননা প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকরা হলেন- এম. আই. করিম, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, সৈয়দ শফিকউদ্দিন আহমদ, বি.এ. আজাদ ইসলামাবাদী, নূর সাঈদ চৌধুরী, ওসমান গণি মনসুর, নিজাম উদ্দিন আহমদ, আবু সুফিয়ান, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, ফারুক ইকবাল, কলিম সরওয়ার, এজাজ ইউসুফী, রাশেদ রউফ, মহসিন চৌধুরী, শুকলাল দাশ, ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী।
সন্মাননা প্রাপ্তদের উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে সন্মাননা স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাদের মধ্যে অভিমত ব্যক্ত করেন- সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক ইকবাল, এজাজ ইউসুফী, রাশেদ রউফ, শুকলাল দাশ ও চৌধুরী ফরিদ। বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শদিউল আলম ও দৈনিক নয়াবাংলা সম্পাদক জেড এম এনায়েতউল্লাহ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, সিডিএ’র চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, লায়ন আলহাজ্ব রফিক আহমদ, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজ, মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, বিজিএমইএর প্রথম সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম, হাজী সাহাব উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সহ সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু’সহ প্রেস ক্লাবের সদস্যবর্গ।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়। এরপর শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। বৃহস্পতিবার রাতে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা ও সন্মাননা প্রদানসহ অনুষ্ঠানমালা শুরু করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার।