অবৈধ সম্পদের মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত আলোচিত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীরা হলেন- দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর এবং দ্য ওয়েস্টিন হোটেলের হাউজকিপিং সুপার ভাইজার মো. জসীম উদ্দিন।
আজ রোববার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ আলী হোসেন এ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর আদালত আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে এই দম্পতিকে শুনানিকালে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এ নিয়ে মামলাটিতে ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হলো। গত ৩০ নভেম্বর একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
সোয়া ছয় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মামলায় গত বছর ৪ আগস্ট দুদকের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেষ্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওই সময়ে হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার স্বামীর নামে জমা করা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে। অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুজন সঙ্গীসহ পাপিয়া এবং তার স্বামীকে আটক করে র্যাব-১। ওই সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ হয়। পরবর্তীদের তাদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়। ওই মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামী মো. মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর গত বছর ১২ অক্টোবর ২৭ বছর করে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করে আদালত।