জাতীয়

সন্তান হত্যার পর ‘জিনের দোষ’ দিলেন বাবা-মা!

(Last Updated On: )

স্বামীর সহযোগিতায় ছেলেকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছিলেন সৎমা মুক্তা বেগম। গা-বাঁচাতে জিনের দোষ দেন তারা। তড়িঘড়ি করে হত্যার শিকার শিশু মারুফকে (৭) দাফন করে ফেলতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু তার আপন মা মারুফা বেগম তাতে বাঁধা দেন। পুলিশে অভিযোগ করলে সদস্যরা এসে মারুফের লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় মুক্তা ও তার স্বামী শাজাহানকে। এরপরই বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।

রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে মারুফ হাসান। গত শুক্রবার সকালে তাকে হত্যার পর জিনে মেরেছে দোষ দিয়ে দাফন করার চেষ্টা করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সৎমা মুক্তা বেগম (৩০) ও বাবা শাজাহান (৩৮) হত্যার কথা শিকার করলে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতে তোলা হয়। পরে বিচারক স্বামী-স্ত্রী দুজনকে জেলহাজতে পাঠান।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, গত ৩০ এপ্রিল সকালে সৎমা মুক্তা বেগম ও বাবা শাজাহান পরিকল্পিতভাবে শিশু মারুফকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। পুলিশের কাছে দেওয়া প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে তারা জানান, মারুফ খুব দুষ্টুমি করত। তার ওপর বিরক্ত হয়েই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা। হত্যার পর প্রতিবেশীদের জানান, জিনে হত্যা করেছে মারুফকে।

জানা গেছে, দিনমজুর শাজাহানের তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে মারুফের মা মারুফা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। তবে মারুফের জন্মের তিন বছর পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। শাজাহান তৃতীয়বার বিয়ে করেন পাশের গ্রামের মুক্তা বেগমকে। মুক্তাকে বিয়ের পর মারুফকে তার মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আসেন শাজাহান। এরপর থেকে বাবা ও সৎমায়ের কাছেই থাকত শিশুটি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়বুর রহমান জানান, ঘটনার দিনই সৎমা মুক্তা ও বাবা শাজাহানকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মারুফকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। গতকাল শনিবার হত্যা মামলা রেকর্ডের পর সৎমা ও বাবাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মারুফের মা সন্তানের মরদেহ গ্রহণ করে নিজের গ্রামে দাফন করেছেন।