শেষ হলো চলতি একাদশ সংসদের একাদশ অধিবেশন; নতুন বছরের এই প্রথম অধিবেশনে নিয়ম অনুযায়ী ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) অধিবেশন সমাপ্তির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠের মধ্য দিয়ে অধিবেশনের ইতি টানেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
১২ কার্যদিবসের এই অধিবেশন শুরু হয় গত ১৮ জানুয়ারি। শুরুর দিন সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে তার ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনেন প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। মহামারীকালের এই পুরো অধিবেশন জুড়েই সংসদ সদস্যরা ওই ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন।
অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে সংসদ। রাষ্ট্রপতি সংসদ কক্ষে রাষ্ট্রপতির গ্যালারি থেকে অধিবেশনের শেষ দিনের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।
অধিবেশন সমাপনীর আগে ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ সামরিক অ্যাকাডেমির প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ সংসদে দেখানো হয়। এ অধিবেশনে বিরোধী দলের সদস্যরা স্বাস্থ্য খাত, নির্বাচন ব্যবস্থা, আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন।
সাধারণত বছরের প্রথম অধিবেশন দীর্ঘ হয়। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হয়েছে। সাধারণত কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ঠিক করা হয়। তবে মহামারীর কারণে গত পাঁচটি অধিবেশনের আগে ওই কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৩২ জন সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ২৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিট আলোচনা করেন। এ অধিবেশনে মোট ছয়টি বিল পাস হয়। কার্যপ্রণালি-বিধির ৭১ বিধিতে ৪৬টি নোটিশ পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটিও আলোচনায় আসেনি।
প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য মোট ৮৪টি প্রশ্ন পাওয়া এসেছে অধিবেশনে, এর মধ্যে তিনি ২৮টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার জন্য মোট এক হাজার ৬৮৯টি প্রশ্ন পাওয়া যায়, যার মধ্যে মন্ত্রীরা উত্তর দিয়েছেন ৮২০টির।
স্বাস্থ্যবিধির বিধিনিষেধের কারণে মহামারীকালের অন্য চারটি অধিবেশনের মত এবারও সীমিত সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেন। প্রথম দিন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া সংসদ সদস্যরা অংশ নেন। এরপর প্রতি কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৯০ জনকে পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সংসদ সচিবালয়ের কর্মরতদেরও অধিবেশন চলার সময় সংসদ ভবনে প্রবেশ সীমিত ছিল। সুনির্দিষ্ট দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বাইরে কাউকে সংসদে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।