কেউ বাজার থেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করেন, কেউবা আবার ঘরে বানিয়ে মাস্ক ব্যবহার করেছেন। মাস্ক ব্যবহারের আগে, সেটি আপনার মুখের সঙ্গে ফিট হবে কিনা তা দেখে নিন।ডাবল মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন।
মাস্ক কী একটি পরলেই যথেষ্ট না কি দুটি পরতে হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না অনেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) থেকেও দুটি মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, যতো ভালো মাস্কই হোক না কেন, একটি না পরে বরং দুটি একসঙ্গে পরা উচিত।
সমীক্ষা অনুসারে, দুটি মাস্ক পরার কারণে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা ৮৫-৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। দুটি মাস্ক ব্যবহারের কারণে যত ক্ষুদ্র জীবাণু বা ভাইরাসই হোক না কেন; তা আপনার নাক বা মুখ দিয়ে প্রবেশ করতে পারেব না। এছাড়াও কারও সঙ্গে কথা বলার সময়ও বেশি দূরে দাঁড়াতে হবে না। গণপরিবহন, অফিস বা বদ্ধ ঘর, বাজার, হাসপাতাল এসব স্থানে যাওয়ার আগে অবশ্যই একসঙ্গে ২-৩টি মাস্ক পরতে হবে।
সিডিসির সাম্প্রতিক গবেষণা তথ্যানুসারে, ডাবল মাস্কের ক্ষেত্রেও লেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে মাস্কগুলো অন্তত ৩ স্তরবিশিষ্ট সেগুলো ভালো সুরক্ষা দেয়। একাধিক স্তরবিশিষ্ট মাস্ক আপনাকে ভাইরাস থেকে রক্ষা করবে। এজন্য নিশ্চিত করুন, আপনি এমন একটি মাস্ক নির্বাচন করেছেন; যেটি একাধিক স্তরবিশিষ্ট। দুটি মাস্ক পরার ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিত করুন যে, আপনি আরামবোধ করেছেন কিনা।
অনেক সময় দেখা যায়, মাস্ক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ কারণে ভালো মানের আরামদায়ক মাস্ক পরুন। মাস্ক পরার পর ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারছেন কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখুন। একটির ওপরে আরেকটি মাস্ক পরলে শরীরে ভাইরাস প্রবেশের পথ অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে যায়। তাই অনেকেই এখন সার্জিক্যাল মাস্কের ওপরে কাপড়ের আরেকটি মাস্ক পরছেন। এতে প্রথমদিকে নিশ্বাস নিতে কিছুটা অসুবিধা হলেও পরবর্তীতে অভ্যাস হয়ে যায়। যাদের সমস্যা হয় তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, প্রথমে একটি সার্জিক্যাল মাস্ক পরে তার ওপরে আরেকটি কাপড়ের মাস্ক পরতে হবে।
মনে রাখবেন, নারীদের পরিহিত শাড়ি বা ওড়না মাস্কের বিকল্প হতে পারে না। তাছাড়া সব সময় এভাবে মুখ ঢেকে চলাফেরাও সম্ভব না। শাড়ি বা ওড়নাকে মাস্ক মনে করা অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর চিন্তা। শাড়ি ও ওড়নার দিয়ে মুখ ঢেকে চলা অজ্ঞতার পরিচয়। কারণ এগুলো কোনোভাবেই ভাইরাস রোধে সুরক্ষা দিতে পারে না।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বদলে গেছে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন। কোনোকিছুই আর আগের মতো নেই। হাজারটা বিধি-নিষেধ মেনেই আমাদের লড়াই চলছে। বারবার হাত পরিষ্কার করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পরিচ্ছন্ন থাকা, মাস্ক পরার মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে উঠেছে আমাদের। তাই এসময় আমাদের আরও বেশি সচেতন ও যত্নবান হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে এসব ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতার বিকল্প নেই।
লেখক: পরিদর্শক অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ।