দীর্ঘ ৬ মাস মহাকাশচারী হিসেবে জাপানের একটি স্পেস স্টেশনে ভ্রমণ করে এলো বাংলাদেশের ধনিয়া বীজ।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও জাপানি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সোর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পরিচালিত এশিয়ান হার্বাস ইন স্পেস প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ অংশ নেয়।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) কনফারেন্সে রুমে এক প্রেসব্রিফিং করে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি বাংলাদেশের তরুণ মেধাবী প্রজন্মকে উৎসাহ প্রদানকারী এ প্রকল্পটি সম্বন্ধে জানার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং প্রকল্পটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এনআইবিকে জোর তাগিদ দেন।
মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পকিত ওই গবেষণায় নাসা এবং জাক্সোর সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) স্পেস সিস্টেম ল্যাবরেটরি প্রকৌশলী মিজানুল হক চৌধুরী।
ওই গবেষণা কার্যক্রমটি কেশব চন্দ্র দাস, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং মোছা. মুসলিমা খাতুনসহ আরও কয়েকজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পরিচালনা করছেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের তেমন কোনো আর্থিক সংশ্লিষ্ট নেই এবং এনআইবি এখন অবকাঠামোতেই গবেষণা পরিচালনা যোগ্য।
প্রেস কনফারেন্স ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক মো. সলিমুল্লাহ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং জাপানি মাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার যে উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পরিচালিত ‘এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস’ প্রকল্পটিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীতে এনআইবির গবেষণাগারে এ সংক্রান্ত গবেষণার সুযোগে নিঃসন্দেহে এনআইবির চলমান গবেষণা নতুন মাত্রা যোগ করবে।
বাংলাদেশের ধনিয়া বীজ দেশের প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে এখন ইতিহাসের অংশ। আমাদের ধনিয়া বীজ ইতোমধ্যে নাসার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ‘জাপানের কেআইবিও মডিউলে’ ৬ মাস অবস্থান করে ফিরে এসেছে পৃথিবীর বুকে। কী হবে ফিরে আসা এসব বীজের?
তিনি বলেন, মহাকাশে পাঠানোর সময় অনুরূপ ধনিয়া বীজের কন্ট্রোল নমুনা সংরক্ষণ করা হয় এনআইবির গবেষণাগারে। মহাকাশ ঘুরে আসা ধনিয়া বীজের সঙ্গে কন্ট্রোল ধনিয়া বীজের তুলনামূলক সব বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে আমরা বুঝতে পারব এসব বীজে কোনো ধরনের ফিজিওলজিক্যাল এবং লিকুলার পরিবর্তন হয়েছে কিনা?
এসব তথ্য পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব বিস্তার এবং ভবিষ্যতে মহাকাশেও ফসল ফলানোর সম্ভবনার পাশাপাশি কিনা এসব জানা অনেক প্রশ্নের উত্তর এনে দিতে পারে।
মো. সলিমুল্লাহ আরও বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সানুগ্রহ অনুমোদন, দিক-নির্দেশনা এবং অপরিসীম উৎসাহ সম্ভব করেছে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে মহাকাশ জীববিজ্ঞান গবেষণায় যুক্ত করতে। মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পকিত এই গবেষণায় দেশের নবীণ শিক্ষার্থীনেরও যুক্ত করা হবে। এই গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা ভবিষ্যতে মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পকিত গবেষণায় অবদান রাখতে পারবেন।