একে একে ২৬টি বিয়ে করে অবশেষে ২৭ নম্বর বিয়ের আগের দিন ধরা পড়লেন বিয়েপাগল চোরা বাবু। গ্রেপ্তার হয়েছেন বাবুর সহযোগী আবুল খায়ের মাতুব্বরও।
গত বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে তাদের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
১২ জানুয়ারি রাতে ভাঙ্গা ও সদরপুর থানাপুলিশের যৌথ অভিযানে প্রথমে উপজেলার জান্দী গ্রাম থেকে আবুল খায়ের ও পরে সদরপুর উপজেলার আকোটের চরগ্রাম থেকে বাবু শেখ ওরফে চোরা বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবুল খায়ের মাতুব্বর ভাঙ্গা উপজেলার জান্দী গ্রামের আবু বক্করের ছেলে ও বাবু শেখ সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর গ্রামের দলিল উদ্দিন শেখের ছেলে। তারা সম্পর্কে ভায়রা ভাই।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি ভাঙ্গা উপজেলায় পর পর কয়েকটি চুরির ঘটনায় মামলা হয়। মামলার সূত্র ধরে প্রথমে জান্দী গ্রাম থেকে আবুল খায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যমতে পুলিশ চোরের সরদার বিয়েপাগল বাবু চোরাকে গ্রেপ্তার করে।
বাবু চোরার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মো. আজাদ জানান, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করাই ছিল চোরা বাবুর টার্গেট। তার জীবনের দুটি নেশা। একটি দামি মোবাইল সেট চুরি, অন্যটি নতুন বিয়ে করে ফুর্তি করা। সে দিনের বেলায় চুরি করত, আর দামি মোবাইলগুলোর আইইএমই নম্বর পরিবর্তন করে তা বিক্রি করে সেই টাকায় বিয়ে করত।
উপপরিদর্শক মো. আজাদ আরও জানান, গ্রামের দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা দিয়ে ওই সব পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করত বাবু। বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে করার সুবাদে ওই সব এলাকায় খুঁজে খুঁজে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে সে পালিয়ে অন্য এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে থাকত।
তিনি আরো জানান, সম্প্রতি দিন-দুপুরে সর্বশেষ চুরির ঘটনা ছিল ভাঙ্গা উপজেলার ছিলাধরচর গ্রামের চাকরিজীবী মিজানুরের বাড়িতে। সেখান থেকে একটি মোটরসাইকেল, কয়েকটি দামি মোবাইল, ল্যাপটপসহ মালামাল চুরি করে বাবু।
এ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি বড় চুরির ঘটনা সে ঘটায়। ঘটনার ১০ দিন পরেই ভাঙ্গার জান্দী গ্রামের দরিদ্র সোবাহানের মেয়ের সঙ্গে চোরা বাবুর বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয় ১৪ জানুয়ারি। এর আগে সে ২৬টি বিয়ে করেছে এমনিভাবে। এ বিয়েটি সম্পন্ন হলে ২৭টি বিয়ে হতো তার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মো. আজাদ আরও জানান, বাবুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। সে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করে এ পর্যন্ত ২৬টি বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছে। বুধবার দুপুরে দুই যুবককে তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে তাদের আটক করতে পারলেও মালামাল উদ্ধার করতে পারিনি। মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।