বিদেশগামীদের করোনাভাইরাসের টিকার জন্য ‘সুরক্ষা অ্যাপ’-এ রেজিস্ট্রেশনের সুবিধার্থে শুক্রবার (২ জুলাই) থেকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) রেজিস্ট্রেশন শুরু হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
রেজিস্ট্রেশন করতে প্লে স্টোর থেকে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ফরমটি ফিল-আপ করে পাসপোর্টের ২য় পৃষ্ঠার ছবি তুলে আপলোড করতে হবে।
ফরমটি ফিল আপ করার সময় একটি ফোন নম্বর দিতে হবে। ওই নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে, যা ফরম ফিল-আপ করার সময় ব্যবহার করতে হবে।
আবেদন করার ৭২ ঘণ্টা অথবা তার আগেই পাসপোর্ট যাচাইয়ের পর আবেদন সম্পূর্ণ হয়েছে মর্মে মেসেজ পাঠানো হবে। ওই মেসেজে আবেদনকারীকে একটি নম্বর দেওয়া হবে, সেই নম্বরে ২০০ টাকা বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। টাকা পাঠানোর পর আবেদনকারী বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন।
এছাড়া কেউ যদি ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আগামীকাল শুক্রবার থেকেই নিজ জেলার জেলা কর্মসংস্থান কার্যালয় /টিটিসিতে গিয়ে ফরম পূরণ করা যাবে। সেক্ষেত্রেও আবেদনকারীর পাসপোর্টের ফটোকপি ও ২০০ টাকা ফি লাগবে। উভয় প্রক্রিয়ায় রেজিস্ট্রেশন করার পর ‘সুরক্ষা অ্যাপ’-এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে অথবা জেলা কর্মসংস্থান কার্যালয়/টিটিসিতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আগামী ২/৩ দিন পর সুরক্ষার ওয়েবসাইটে বিদেশগামী বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী নামের ফিল্ড প্রদর্শিত হবে। এই ফিল্ডে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। পরবর্তীতে আবেদনকারীকে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের তারিখ ও স্থান জানানো হবে।
এর আগে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, শুক্রবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দেশের ৪২টি জনশক্তি অফিস, ৯টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও একটি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে অথবা ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে বিএমইটি’র এই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানায়, যেসব কর্মীর বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন ও স্মার্ট কার্ড নেই বা ১ জানুয়ারির আগের বিএমইটির স্মার্ট কার্ড আছে সেসব কর্মীদের টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের সুবিধার্থে বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে ২ জুলাই থেকে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন করতে হবে। তবে জানুয়ারি ২০২১ থেকে নিবন্ধিত কর্মীদের নতুনভাবে নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সরকার প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে গমন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকাদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় আরও জানায়, দেশের ৪২টি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ৯ টিটিসি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষীপুর, মাদারীপুর, মেহেরপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট) এবং বিআইএমটি, নারায়ণগঞ্জ-এ (তালিকা : www.bmet.gov.bd তে পাওয়া যাবে) স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে হাজির হয়ে নির্ধারিত ও নিজ জেলায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অথবা অনলাইনে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে টিকার জন্য নিবন্ধন করা যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় উল্লেখ করা হয়, করোনা টিকাদান ও সনদায়ন কার্যক্রম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড। সে কারণে সুরক্ষা অ্যাপ বা www.surokkha.gov.bd-এ নিবন্ধিত হয়ে টিকা কেন্দ্র ও তারিখ সংক্রান্ত মেসেজ না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশগামী কর্মীরা কোনো হাসপাতাল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিএমইটি বা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে জমায়েত হয়ে টিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। তাই বিদেশগামীদের বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।