জাতীয়

বিচারকের আচরণ লজ্জাজনক: হাইকোর্ট

(Last Updated On: )

দুর্নীতির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত কারা উপমহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিককে অতি গোপনে জামিন দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সর্বোচ্চ সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে উচ্চ আদালত পার্থ গোপালকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা লজ্জাজনক এবং আইনের সঙ্গে সংগতিহীন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১২ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন। ওই রায়ে আদালত এসব মন্তব্য করেন।

হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের বিচারকেরা বলেন, ‘আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে জেলা জজ পর্যায়ের একজন বিচারকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ ও কর্ম প্রত্যাশিত নয়। তাঁর এ ধরনের আদেশ উচ্চ আদালতের প্রতি অবজ্ঞা এবং যা আদালত অবমাননার শামিল। হাইকোর্ট বিভাগ ইতিপূর্বে আসামির জামিন নাকচ করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিজ্ঞ বিচারক আসামিকে জামিন প্রদান করে হাইকোর্টের আদেশকে অবজ্ঞা করেছেন।’

গত ১৭ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চ্যুয়াল আদালত পার্থ গোপাল বণিককে ১৫ জুলাই পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি কারামুক্ত হন।

পরে ওই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। এরপর ২ সেপ্টেম্বর পার্থ গোপাল বণিককে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ জুলাই জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৩ আগস্ট পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি পার্থ গোপাল বণিক গত বছরের ২৮ জুলাই দুদকে হাজির হয়ে অনুসন্ধান টিমের কাছে বক্তব্য দেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে পার্থ গোপাল বণিক জানান, তাঁর বাসায় ৩০ লাখ টাকা আছে। এই টাকার বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁর বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

পার্থ গোপাল বণিক ১৯৯৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আর ২০০২ সালে তিনি জেল সুপার পদে চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর তিনি কারা উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান।