সামনেই গুজরাটে বিধানসভার নির্বাচন। তার আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা সেই রাজ্যে বসবাসকারী অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দিতে যাচ্ছে ভারত সরকার।
সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করে এই কথা জানানো হয়। সে ক্ষেত্রে রাজ্যটির আনন্দ এবং মেহসানা জেলায় বসবাসকারী হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সি-এই ছয়টি ধর্মের নাগরিককে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকের হাতে এই ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। বৈধ ভিসা ও পাসপোর্ট নিয়ে আসা এই নাগরিকরা নাগরিকত্ব আইন-১৯৫৫ আইনের ৫ ও ৬ ধারায় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিল। বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-২০১৯ (সিএএ) আইনের অধীনে এই নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সংসদে এ সম্পর্কিত একটি আইন পাস হয়। বিতর্কিত এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে চলে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যদিও এই বিলটির বিরোধিতা করে সে সময় দেশজুড়ে প্রতিবাদ, আন্দোলনে শামিল হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের অভিমত ছিল ধর্মের ভিত্তিতে এই আইন তারা কোনোভাবেই সমর্থন জানাবে না।
তবে এবারই নয়, এর আগেও ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে চলে আসা নাগরিকদের ২০১৬, ২০১৮, ২০২১ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে গুজরাট, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানের একাধিক জেলার জেলা শাসকদের হাতে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। চলতি বছরের আগস্ট মাসেই আমেদাবাদ জেলা শাসক অফিসে একটি অনুষ্ঠানে ৪০ জন হিন্দু নাগরিকের হাতে ভারতীয় নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেন রাজ্যটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংভি। তারা সবাই বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান থেকে ভারতের গুজরাটে চলে আসেন।
তবে ভোটের আগে গুজরাটে এই নাগরিকত্ব কার্যকর করা নিঃসন্দেহে একটি বড় রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতা বালা ঠাকুর বলেন, ‘গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি নিঃশর্ত নাগরিকত্ব।’