‘নির্বাচনী রোডম্যাপ’ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দেয়া বক্তব্যে আশাহত বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার যে সময় নিচ্ছে বিএনপি সেটিকে যৌক্তিক মনে করে না। নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে, এখন নির্বাচনের রোডম্যাপের কোনো বাঁধা নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই দ্রুত নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে।
গতকাল বুধবার হওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সবাই মনে করে ড. ইউনূসের বক্তব্য অস্পষ্ট। কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, বিজয় দিবসে দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬-এর প্রথমার্ধে নির্বাচন করার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা যা একেবারে অস্পষ্ট। সুনির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ নেই। আবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন ২০২৬ সালের জুনের কথা যা পরস্পরবিরোধী। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।
সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।
তিনি বলেন, আমি সকল প্রধান সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করার ব্যাপারে বারবার আপনাদের কাছে আবেদন জানিয়ে এসেছি। তবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের কারণে আমাদের যদি, আবার বলছি ‘যদি’, অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটারতালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয় তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এরসঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে অন্তত আরও ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। যা থেকে এটি স্পষ্ট যে, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ নির্ধারণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।