পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এরইমধ্যে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের আভাস পাওয়া গেছে। যদিও এ নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের ভরাডুবি হয়েছে। এই জোট মাত্র একটি আসনে এগিয়ে। শিলিগুড়িতে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য তৃতীয় স্থানে, অধীর চৌধুরীর দুর্গ বহরমপুরে এগিয়ে বিজেপি। পিছিয়ে কংগ্রেস নেতা ও বিদায়ী বিধানসভার বিরোধী নেতা আব্দুল মান্নান, সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। কগ্রেসের কোনো প্রাথী এগিয়ে নেই। আইএসএফেরও কোনো প্রার্থী এগিয়ে নেই। আব্বাস সিদ্দিকি সংখ্যালঘু ভোট টানতে ব্যর্থ।
প্রাথমিকভাবে সিপিএম সাড়ে তিন শতাংশ, কংগ্রেস আড়াই শতাংশ ভোট পয়েছে। এই প্রবণতা বজায় থাকলে পশ্চিমবঙ্গে আপাতত পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক হওয়ার মুখে বাম-কংগ্রেস। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল মালদহ ও মুর্শিদাবাদ। কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে, প্রায় সব আসনেই পিছিয়ে কংগ্রেস ও বাম। এই দুই সংখ্যালঘু প্রধান জেলায় কংগ্রেস ও বামের ভোটের বড় অংশ চলে গেছে তৃণমূলের কাছে। ফলে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। অধীর তার দুর্গ বাঁচাতে পারেননি। এতদিন ধরে গনি খান চৌধুরির কল্য়াণে মালদহে জিততো কংগ্রেস। সেখানেও তারা হেরেছে।
অপরদিকে মহাম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, অশোক ভট্টাচার্য, আভাস রায়চৌধুরী, সুশান্ত ঘোষের মতো হেভিওয়েট বাম প্রার্থীরা গণনা যত এগোচ্ছে, তত পিছিয়ে পড়ছেন। ঐশী ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, সায়নদীপ মিত্র প্রমুখ নবীন প্রজন্মের বাম কর্মীরাও এবারের ভোটে কোনরকম আলোচনাতেই উঠে আসছেন না, সেই ছবিটা ক্রমশই পরিষ্কার হচ্ছে।
প্রচার পর্বে বামেরা অনেকটা দাগ কাটতে পারলেও বাম কর্মী-সমর্থকদের ভোট তারা নিজেদের পক্ষে ধরে রাখতে পেরেছেন কি না, এই প্রশ্ন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এই প্রশ্নও রয়েছে যে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে একটা বড় অংশের বামপন্থি কর্মী-সমর্থকেরা বিজেপির প্রতি সমর্থন দেখিয়েছিল, সেই অংশের একটা বড় অংশের মানুষ কি বিধানসভাতে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে? কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের সমঝোতার নিরিখে এই প্রশ্নটা তীব্র হচ্ছে যে, উভয় দলই কি আন্তরিকভাবে ভোট শেয়ারিং করেছে?