জাতীয়

ধর্ষণ মামলায় জামিন মেলেনি আওয়ামী লীগ নেতা বড় মনিরের

(Last Updated On: )

টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আজ রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শেখ আব্দুল আহাদের আদালত জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁশলি (পি‌পি) এস আকবর খান জানান, কিশোরীর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গোলাম কিবরিয়া বড় ম‌নি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপীল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। সেই আদেশ অনুসারে বড় মিন গত ১৫ মে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আজ মিস কেসের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বড় মনির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রহমান, ব্যারিস্টার গোলাম নবী, বারের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনসুর আলী খান বিপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামসহ অর্ধশত আইনজীবী।

রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবার খান, সিনিয়র আইনজীবী মো.আব্দুল করিম মিঞা, বারের সাবেক সভাপতি ফায়কুজ্জামান নাজীবসহ ১৫ জন আইনজীবী।

গত ১৫ মে বড় মনিকে কারাগারে পাঠানোর পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর থেকেই তিনি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী নিজে বাদী হয়ে বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, বড় মনির তাদের আত্মীয় এবং পূর্ব পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের কথা হতো। ওই কিশোরীর ভাইয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে সমস্যা হয়। এ কথা বড় মনিরকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বড় মনির পরে গত ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্লাটে যেতে বলেন।

সেখানে যাওয়ার পর মেয়েটিকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন তিনি। তাতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনির কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং ছবি তুলে রাখেন। ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন এবং কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। তারপর ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে ধর্ষণ করতেন বড় মনির।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ কথা জানালে বড় মনির তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনির মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান।

সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে। পরে তাকে সেখানে আবারও ধর্ষণ করেন বড় মনির। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলে প্রমাণ পেয়েছে মেডিকেল বোর্ড। গত ৬ এপ্রিল আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরী।