জাতীয়

দুইডা অস্ত্র লইয়া থাকমু, স্টিম রোলার চালাতে হবে…


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

নৌকার বিপক্ষে গিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যাবে না বলে হুমকি দিয়েছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন। একইসঙ্গে তিনি অস্ত্রের বয়ও দেখিয়েছেন।

একটি বাজোরে নির্বাচনী পথসভায় দেওয়া তার বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।  

তিনি বলেছেন, ‘আমরা কিন্তু এত নরম না। এখনো সময় আছে। কালকের পর থেকে স্টিম রোলার চলবে। যদি কোনো …. থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে যেন যুদ্ধ করতে আসে। এই নৌকার বিপক্ষে গিয়া যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন না। ’ 

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে এই হুমকি দেন তিনি।  

গত শুক্রবার রাতে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সূর্যমনী বাজারে নির্বাচনী পথসভায় এই হুঁশিয়ারি দেন। যুবলীগ নেতা আফজাল ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মজিবুর রহমান মোল্লার ভাতিজা। তার ওই পথসভায় দেওয়া বক্তব্যের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে।

এক মিনিট ৪২ সেকেন্ডের প্রথম ভিডিওতে আফজাল হোসেন বলেন, ‘এখনো সময় আছে, নৌকার পেছনে কারও …. নাই যে নৌকা পেছনে কেউ আইয়া বাধা দিবে। সে ক্ষমতা কারও নাই। আবদুস সোবাহান গোলাপ (মাদারীপুর-৩ আসনের সাংসদ) এত নরম না। সে (আবদুস সোবাহান) রবিবার থেকে স্টিম রোলার চালাতে বলবে, আপনারা (নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা) চালাবেন। আর আমি থাকব আমার কাছে দুইডা অস্ত্র লইয়া। দুইডা অস্ত্র লইয়া আমি থাকমু, কারও …. থাকলে আমার সামনে জানি আসে। দয়া কইরা নৌকার বিরুদ্ধ কেউ যাইয়েন না। নৌকার বিরুদ্ধে গেলে কারও বাঁচন নাই। ’

২ মিনিট ৮ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে আফজাল বলেন, ‘আমরা কিন্তু এত নরম না। এখনো সময় আছে। কালকের পর থেকে স্টিম রোলার চলবে। যদি কোনো … থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে যেন যুদ্ধ করতে আসে। এই নৌকার বিপক্ষে গিয়া যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন না। ’

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মজিবুর রহমান মোল্লা বলেন, পথসভায় আমার ভাতিজা কোনো হুমকি দিয়ে কথা বলেনি। আফজাল বলেছে, “আমি প্রার্থী ছিলাম। আমার চাচারে সমর্থন দিলাম। আপনারা সবাই আমার চাচারে নৌকায় ভোট দিবেন। ” আমার ভাতিজাও নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিল। আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় সে এখন নৌকার পক্ষে কথা বলেছে। তবে সে কোনো খারাপ কথা বা হুমকি দিয়ে কিছু বলেনি। ’

ভোটারদের হুমকি দিয়ে প্রচারণা কতটুকু যৌক্তিক, এমন প্রশ্ন করা হলে আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমরা নৌকা পাইছি, একটু হুমকি-ধমকি কি দিতে হবে না? একখানে গেলে পাল্টাপাল্টি কথা হয়। আমার ঘরের পাশেই মিটিং হয়েছে। ঘরের পাশেই আমার আপন চাচাতো ভাই আছে। ওই সূত্র ধরেই এসব কথা বলা। তবে ভোটারদের হুমকিস্বরূপ কিছু না। আমার চাচার নির্বাচন করতাছি। তিনি মিনমিন করে কথা বলে। নৌকার জোয়ার নামাইতে পারে নাই। মিনমিন করলে নৌকার অবস্থা কী হবে? আমি নৌকার পক্ষে কথা বলেছি। হুমকি দেওয়া হয়েছে যারা নৌকাকে নিয়ে কটূক্তি করে কথা বলে, সেখানে কি দুইচারটা কথা আসবে না। সেই সূত্রে কিছু কথা বলেছি। তবে এসব কথাও ঘরোয়া। ’

এ প্রসঙ্গে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ভিডিওটা আমি দেখেছি। পথসভায় এভাবে হুমকি ও উসকানিমূলক কথা বলা আচরণবিধির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। এসব দেখার জন্য তিনজন ব্যক্তি কাজ করেন। তারা হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, রিটার্নিং অফিসার ও ওসি। তাঁরা সমন্বিতভাবে আচরণবিধির বিষয়গুলো দেখবেন। তাঁরাই পদক্ষেপ নিবেন। ’

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ১১ নভেম্বর কালকিনি ও ডাসার উপজেলার ১৩টি ইউপিতে ভোট হবে। এর মধ্যে  লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মজিবুর রহমান মোল্লা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌসুমি হক সুলতানা ও লিয়াকত হোসেন। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন