ভারী বর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে যমুনার ভাঙনে গত তিনদিনে ব্যবধানে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার একটি গ্রামের ২০টি বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত মানুষগুলো সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে কিংবা ওয়াপদার পাশে।
বুধবার (৯ জুন) বিকেলে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের হাট পাচিল গ্রামে যমুনার ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। তিনদিনে অন্তত ২০টি বাড়িঘর ছাড়াও ফসলের জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে এ এলাকার কয়েক শত বাড়িঘর ও ফসলের জমি। এছাড়া এনায়েতপুর-শাহজাদপুর আঞ্চলিক সড়কটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
হাট পাচিল গ্রামের বয়োবৃদ্ধ জাহানারা বেগম বলেন, যমুনার ভাঙনে অর্ধেক বাড়িঘর চলে গেছে। এখন বয়স হয়ে গেলেও বৃদ্ধভাতার কার্ড চাই না। সরকার দ্রুত ভাঙন ঠেকানোর জন্য ব্যবস্থা নিক, এটাই আমাদের দাবি।
একই এলাকার হায়দার আলী জানান, তার পুরো বাড়িটার পাশাপাশি ধান ভাঙানোর মেশিনঘরটিও নদীগর্ভে চলে গেছে।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাঙ্গীর আলম নামে অপর এক বৃদ্ধ বলেন, তার চার বিঘা জমির বাড়িটার অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়েছে। ১৪ বিঘা জমিও ভাঙনের মুখে রয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুন) এ এলাকাকে ভাঙন থেকে রক্ষায় নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে ভাঙন কবলিত মানুষগুলো বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সরকার আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি নির্মাণ করে ভাঙনের হাত থেকে এনায়েতপুর, শাহজাদপুরবাসীকে রক্ষার দাবি জানান তারা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে মঙ্গলবার (৮ জুন) থেকে জরুরী ভিত্তিতে বালুভর্তি জিওব্যাগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ওই অঞ্চল যাতে আর না ভাঙে, সে দিকে লক্ষ্য রেখে পাউবো কাজ করছে। এছাড়া প্রায় সাড়ে ছয়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে এনায়েতপুর-শাহজাদপুর এলাকার সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্পটি মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। আমরা জরিপ শুরু করেছি। খুব শিগগিরই এ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।