বরিশাল মহানগরে অস্ত্র নিয়ে দুই নেতার ধস্তাধস্তির একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওতে জাতীয় পার্টির (জাপা) আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট একেএম মর্তুজা আবেদীন এবং নগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্নাকে দেখা গেছে। পরে অস্ত্রসহ মর্তুজা আবেদীনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই জাপা নেতা অস্ত্রটি নিজের বলে দাবি করলেও কাগজপত্র যাচাই করে দেখছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডে সদর ভূমি অফিসের সামনে অস্ত্র নিয়ে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি অটোরিকশা ঘিরে আকস্মিক চিৎকার শুনে সবাই সেদিকে ছুটে যায়। তখন দেখা যায় একটি পিস্তল নিয়ে টানাটানি চলছে। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে গেলে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দ্রুত পিস্তলটি তাদের জিম্মায় নেন এবং মর্তুজাকে তাদের হেফাজতে নেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পিস্তলসহ মর্তুজাকে নিয়ে যান।
শ্রমিকলীগ নেতা রইজ আহমেদ মান্না বলেন, ‘আমার বাসার একটি জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল, যার কারণে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের সঙ্গে কথা বলতে আজ সেখানে যাই। ভূমি অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে গিয়ে দাঁড়াই। ওই মুহূর্তে পেছন থেকে মর্তুজা এসে আমার পেছনে দাঁড়ায়।’ মর্র্তুজার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হলে দুজনেই সামনে এগিয়ে যান বলে দাবি করেন তিনি। এরপর মর্তুজা হঠাৎ অস্ত্র বের করলে স্থানীয় শ্রমিকরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
তবে পিস্তলটির লাইসেন্স আছে বলে জানিয়েছেন জাপা নেতা অ্যাডভোকেট মর্তুজা আবেদীন। তিনি বলেন, বাগবিত-ার একপর্যায়ে তারা কয়েকজনে মিলে আমাকে মারধর করে। এ সময় আমার কোমরে থাকা লাইসেন্স করা রিভলবার থাবা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর মারতে মারতে আমাকে একটি অটোরিকশার মধ্যে নিয়ে যায়। তখন এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এলে তাকে পিস্তলটি নিতে বলি, সে নেওয়ার আগেই একটি ছেলে সেটি নিয়ে যায়। তারপর ওই পুলিশ সদস্য ওই ছেলের কাছ থেকে পিস্তলটি নিজের জিম্মায় নেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, মর্তুজা আবেদীনকে পিস্তলসহ আমাদের হেফাজতে নিয়ে এসেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি, সেই সঙ্গে পিস্তলটির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বরিশাল সিটি করপোরেশনের দুই নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ বছর ধরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আসছেন অ্যাডভোকেট মর্তুজা আবেদীন। সদ্য অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও বর্তমান মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্না। কিন্তু প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় সেখানে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন মান্নার ভাই মুন্না হাওলাদার। ওই নির্বাচন কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।