ছেলেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে চট্টগ্রামের ইপিজেডে নিহত লায়লা বেগম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ইরানকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) ভোর রাতে চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানার ইছাখালী থেকে ইরানকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে র্যাব।
২০০৯ সালের একটি হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেয়ায় সন্ত্রাসীরা জামিনে বের হয়ে ১ জানুয়ারি হামলা করে ওমর ফারুকের ওপর। তারা মায়ের সামনে লোহার শাবল দিয়ে পেটাচ্ছিল ছেলে ওমর ফারুককে (২২)। দেখে ছেলেকে বাঁচাতে ছুটে আসেন মা লায়লা বেগম।
তিনি এসে বাধা দিলে সন্ত্রাসীদের শাবলের আঘাত পড়ে লায়লা বেগমের মাথায়। শাবলে আঘাতে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়েন লায়লা বেগম। আশংকাজনক অবস্থায় লায়লা বেগমকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করা হলে ৫দিন চিকিৎসা শেষে ৬ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়।
গত ১ জানুয়ারি নগরের ইপিজেড থানার ২ নং মাইলের মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সন্ত্রাসীরা ছিল পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানার ইছাখালী থেকে আসামি ইরানকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে র্যাব। ইরান ২নং মাইলের মাথা এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে। নিহত লায়লা বেগম একই এলাকার কবির আহমেদের স্ত্রী।
র্যাব-৭ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায়, ২০০৯ সালের ১১ এপ্রিল পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ইপিজেড থানার ২ নং মাইলের মাথা এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে মো. আরমান (৩৫), ইরান (৩৩) ও ইমতিয়াজ (৩২) ভিকটিম এরশাদকে কাজ থেকে ফেরার পথে ধারালো ছোরা দিয়া মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন গুরুতর আহত এরশাদকে উদ্ধার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন এরশাদ মারা যায়। এ ঘটনায় ১২ এপ্রিল বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলার দায়ের হয়।
এ মামলায় আসামি ইরানসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে আসে। অন্য আসামি আরমানও প্রায় ১বছর জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আসে। জামিনে বের হয়ে আসার পর আসামিরা এরশাদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রদান না করার জন্য সাক্ষীদের হুমকি দিয়ে আসছিল।
ওই মামলার ঘটনার বিষয়ে কবির আহম্মেদ (৬৫) ও তার ছেলে ওমর ফারুক (৩১) বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করে। ঐ মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করায় আসামিরা তাদের জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল।
আসামিরা গত ১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে আটটায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাদীর বাড়ির উঠানে গিয়ে লোহার শাবল, বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতারী আঘাত করে লায়লা বেগম ও বাদীর ছেলেকে গুরুতর জখম করে।
প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ২ টি হত্যাসহ মোট ৪টি মামলা রয়েছে।