রাজধানীতে রাইদা সিটিং সার্ভিসের একটি বাস থেকে ১০ বছরের মেয়ে শিশু মরিয়মকে ফেলে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ওই বাসের চালক রাজু মিয়া (২৫) ও তার সহযোগী ইমরান হোসেনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যা ব।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাটব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে র্যাযব। সেখানে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যা বের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, মরিয়ম তার পরিবারের সঙ্গে খিলক্ষেতের কুড়াতলী এলাকায় থাকতো। ২০১৯ সালে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলো মরিয়ম। কিন্তু অর্থের অভাবে বেশিদূর পড়াশোনা করা হয়নি তার। মেয়েটি ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত ছিল। ঘটনার দিন বাসটি যমুনা ফিউচার পার্কে পৌঁছালে মরিয়ম যাত্রীদের কাছে সাহায্য চাইতে গাড়িতে ওঠে।
সেই গাড়ির হেলপার ইমরান তখন চালক রাজুকে বলে, একজন পথশিশু গাড়িতে উঠেছে। তাকে নামিয়ে দেয়ার জন্য গাড়ির গতি কমাতে বলে। এ সময় রাজু মরিয়মকে দরজার কাছে নিয়ে যেতে বলে। চালক রাজু কিছুদুর না যেতেই গাড়ি আবার থামতে বলায় কিছুটা বিরক্ত হয়ে বাসের গতি হালকা কমিয়ে, মরিয়মকে তাড়াতাড়ি নামতে বলে ইমরান।
এ সময় মরিয়ম তাড়াহুড়ো করে নামার সময় হঠাৎ চালক জোরে গাড়ি চালানো শুরু করে। এতে মরিয়ম বাসের দরজা থেকে ছিঁটকে রাস্তায় পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওইদিন বিকেলে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন বাবা রনি মিয়া। পরে এ ঘটনায় রাতেই অজ্ঞাত গাড়িচালককে আসামি করে মামলা করেন তিনি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মামলার পর র্যািব এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। এ সময় ঘটনাস্থল ও আশপাশের প্রায় ৫০টির বেশি সিসিটিভি ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে র্যা ব। এরপরই শিশুটির মৃত্যু রহস্য উদঘাটন হয়।
তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে- মরিয়ম হেঁটে ফুটওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করে যমুনা ফিউচার পার্কের বিপরীত পাশে আসে। এরপর সে রাইদা সিটিং সার্ভিসের একটি বাসে ওঠে। বাসটি সামনে যেতেই একজন পথচারীকে হাত দিয়ে ইশারা করতে থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরার এক ফ্রেমের ঠিক পেছনে সড়কে পড়ে থাকতে দেখা যায় মরিয়মকে। পরে পৃথক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এ ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে।
বাসচালক রাজু মিয়া ছয় বছর ধরে রাইদা পরিবহনের গাড়ি চালান। পোস্তগোলা থেকে বাড্ডা-দিয়াবাড়ি পর্যন্ত তিনি সেই গাড়ির বাসচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর তার সহযোগী (হেলপার) ইমরান হোসেন আগে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ছয় মাস আগে তিনি রাইদা পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন।