হরমোনের তারতম্যের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদানের চাহিদাও থেকে বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগে।
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা, চলাফেরায় অসুবিধা, খেতে না পারা, মানসিক অবস্থার ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন ইত্যাদি দেখা দেয়। খেতে অসুবিধা যেমন হয় তেমনি এসময় বিভিন্ন খাবার খাওয়ার আগ্রহ জেগে ওঠাও অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা।
বিভিন্ন ধরনের খাবারের এই আকাঙ্ক্ষার পেছনে হরমোনের তারতম্যের প্রভাব যেমন আছে তেমনি আছে নির্দিষ্ট কোনো পু্ষ্টি উপাদানের চাহিদাও।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো সাধারণ কিছু খাবার খাওয়ার ইচ্ছা সম্পর্কে যা গর্ভাবস্থায় দেখা দেওয়ার কারণটা শুধু্ই স্বাদ উপভোগ করা নয়।
আইসক্রিম: আইসক্রিম একটি প্রিয় খাবার। আর তা খেতে ইচ্ছা করে শীত কিংবা গরম যাই হোক না কেনো। তবে একজন গর্ভবতী নারীর আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা হওয়ার পেছনে আরেকটি বিশেষ কারণ হল এতে থাকা উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম। তবে যতই ইচ্ছা হোক না একবারে বাটি ভরে খাওয়া চলবে না। আইসক্রিমের বদলে বেছে নিতে পারেন শীতল টকদই।
আলুর চিপস: প্রচণ্ড অস্বাস্থ্যকর হওয়ার পরও এই খাবারকে না বলতে পারবে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে গর্ভাবস্থায় আলুর চিপস খাওয়ার পেছনে মূল চাহিদা এতে থাকা লবণ। গর্ভাবস্থায় শরীরের প্রচুর পরিমাণে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন দেখা দেয়। আর লবণের সোডিয়াম পানি ধরে রাখার কাজটি করে। তবে আলুর চিপসের বদলে পপকর্ন খাওয়া ভালো, কারণ তাতে ক্যালরির পরিমাণ কম।
কোমল পানীয়: গর্ভবতী নারীর কোমল পানীয়ের প্রতি আকাঙ্ক্ষা দেখা দেওয়ার অর্থ তার শরীর চিনি চাইছে। তবে ফলের শরবত বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আচার: আচার খাওয়ার সঙ্গে মা হতে যাওয়ার সম্পর্কটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। বাস্তব জীবনে সিংহভাগ নারী সব বয়সে আচার খেতে পছন্দ করেন। তবে নাটক সিনেমাগুলোতে নারীর আচার খাওয়াকেই মা হতে যাওয়া শুভ সংকেত হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। আচার সুস্বাদু এতে দ্বন্দ্ব নেই, তবে গর্ভাবস্থায় তা খেতে মন চাওয়া পেছনে মূল হোতা ওই সোডিয়াম। এই সময়ে নারীর শরীরে রক্তের মাত্রা বাড়ে আর সেখান থেকে সোডিয়ামের চাহিদা বাড়ে। তবে চেষ্টা করতে হবে লবণ কম এমন আচার খাওয়ার।
চকলেট: সবার সবসময় চকলেট খেতে মন চায় না। গর্ভাবতী অবস্থায় চকলেট খেতে মন চাওয়া বিশেষ কারণ হলো ক্যালরির ঘাটতি পূরণ করা। ডার্ক চকলেটকে ভালোবাসতে পারলে তা শরীরের জন্য উপকারী হবে।
কফি: গর্ভধারণের আগে যদি কফির প্রতি ভালোবাসা থাকে, তবে গর্ভাবস্থার পুরো সময়টা তা পান করার ইচ্ছা থাকবে প্রবলমাত্রায়। তবে অতিরিক্ত কফি ‘প্লাসেন্টা’র জন্য ক্ষতিকর এটাও মাথায় রাখতে হবে।
ডিম: প্রোটিনের উৎস হিসেবে দারুণ একটি খাবার ডিম। একারণেই হয়ত গর্ভবতী নারীদের মাঝে এর আকাঙ্ক্ষা সবচাইতে বেশি দেখা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে ডিম পুরোপুরি রান্না করার ব্যাপারটা। অন্যথায় ‘সালমোনেলা’ ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।