সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নে একটি খেলার মাঠে বনায়ন করার অভিযোগ উঠেছে বনবিভাগ বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এটি বন বিভাগের পতিত জমি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এই স্থানে বনায়ন করা হচ্ছে।
উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রামের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত খেলার মাঠটি। সেখানে খেলাধুলা করে আসছে গ্রামের শিশু-কিশোররা। অবসরে চলে প্রবীণদের আড্ডা। কিন্তু হঠাৎ করেই বন বিভাগের পক্ষ থেকে সেখানে গাছ লাগানো শুরু হয়। এলাকার তরুণরা মাঠের অংশ বাদ দিয়ে বাকি জায়গাটুকুতে গাছের চারা রোপণের অনুরোধ জানালেও মানছে না বন বিভাগ।
এলাকাবাসী জানান, এই গ্রামে কোথাও খেলার মাঠ নেই। কয়েক যুগ ধরে এই মাঠে খেলছে তাদের প্রজন্ম। বন বিভাগের বৃক্ষরোপণের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিশু-কিশোরদের কথা চিন্তা করে গাছের চারা রোপণ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
গ্রামের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে এই মাঠে খেলাধুলা করে এসেছি। অতীতে কোনো সময় কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠ বন্ধ করে বনায়নের সিদ্ধান্ত নেয়নি। হঠাৎ করে তাদের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক। এই খেলার মাঠ রক্ষায় ক্রীড়াবান্ধব বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সৈয়দপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মেজবা উদ্দিন রানা বলেন, ‘আশপাশে ৭-৮ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো খেলার মাঠ নেই। এই মাঠে বনায়ন করলে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ বনবিভাগ চাইলে বিভিন্ন খালি জায়গায় চারা রোপণ করতে পারে। আমি বিট অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে খোঁড়া অযুহাত দেখাচ্ছেন। ’
খেলার মাঠে বনায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ডের বন কর্মকর্তা মো. কামাল বলেন, ‘মাঠটি বন বিভাগের আওতাধীন। মাঠের ওই অংশটুকু খালি থাকায় বিভিন্ন সময় বনের হরিণ শিকার করার ফাঁদ পাতে স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত। কিছুদিন আগেও আমরা আহত একটা হরিণ উদ্ধার করেছি।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু উপকূলবর্তী এলাকা- তাই সেখানে বনায়ন খুবই জরুরি। উপকূল রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনাও রয়েছে। তাই এই জায়গায় গাছের চারা লাগানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এসএম গোলাম মাওলার সঙ্গে একাধিববার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, খেলার মাঠে বনায়নের সিদ্ধান্তটি দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে যেহেতু আমার নজরে এসেছে আমি বিষয়টি যাচই করে দেখবো। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে বন বিভাগ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।