সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়াসহ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে বন ও বন্যপ্রাণী আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে বাগেরহাট জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজার সংলগ্ন এলাকায় বন বিভাগ ও র্যাব-৮-এর সদস্যরা অভিযান চালায়। অভিযানে কৌশলে ক্রেতা সেজে একটি বাঘের চামড়াসহ ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আটক গাউছ ফকির (৪৫) বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের মৃত রশিদ ফকিরের ছেলে।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে র্যাব-৮ ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, পেশাদার চোরা শিকারী গাউছ ফকির সুন্দরবন থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার হত্যার পর সেটির চামড়া বিক্রির জন্য বিভিন্ন ক্রেতার সাথে দেনদরবার করে আসছিল। এমন খবর বন বিভাগ জানার পর র্যাব-৮-এর সহায়তায় তারা (অভিযানকারীরা) ওই শিকারীর সাথে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে চারদিন ধরে ক্রেতা হিসেবে যোগাযোগ করতে থাকেন। গাউছ তাদের কাছে ১৭ লাখ টাকা চান চামড়ার মূল্য হিসেবে। পরে ১৩ লাখ টাকায় দাম ঠিকঠাক হয়। এরপর ওই শিকারীকে ধরতে ফাঁদ পাতে বন বিভাগ ও র্যাব সদস্যরা। চোরা শিকারী গাউছ ফকিরকে বাঘের চামড়া হস্তান্তরের সময় পুরো টাকা পরিশোধ করা হবে বলে তাকে আশ্বস্ত করে ছদ্মবেশধারী প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সেই অনুযায়ী গাউছ ফকির মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি বস্তায় বাঘের চামড়াসহ শরণখোলার রায়েন্দা বাজার এলাকায় আসে। সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে বস্তা ভর্তি বাঘের চামড়াসহ ওই তাকে আটক করা হয়। উদ্ধার হওয়া বাঘের চামড়াটির দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ১ ইঞ্চি এবং প্রস্ত ৩ ফুট ১ ইঞ্চি।
যৌথ বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে আটক চোরা শিকারী গাউছ ফকির বলেন, তিনি কয়েক মাস আগে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের শহিদুল নামের অপর এক চোরা শিকারীকে সাথে নিয়ে সুন্দরবনে গিয়ে পূর্ণ বয়স্ক একটি বাঘ হত্যা করেন। পরে চোরা বাজারে চামড়াটি বিক্রির জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।
বন ও বন্যপ্রাণী আইনে বাঘ হত্যার দায়ে আটক চোরা শিকারী গাউছ ফকিরের সবোর্চ্চ ১০ বছরের সাজা ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে বলে আশা পূর্ব সুন্দরবনে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের।