পরিবেশ আইন অমান্য করে পাহাড় কাটার অপরাধে কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (কেএসআরএম) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার সীতাকু- উপজেলার বাড়বকু- ইউনিয়নের জঙ্গল কাঠগড় এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল কেটে ফেলা পাহাড় পরিদর্শনে যায়। পরিদর্শন শেষে জানানো হয়, দুই বছর আগে পাহাড় কাটার অপরাধে জরিমানা এবং বর্তমানে পাহাড় কাটার বিষয়টি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে গোপনে জঙ্গল কাঠগড় মৌজার ১২ নম্বর দাগের পাহাড় কাটছিল কেএসআরএম। গত বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সরকারি বন্ধের সুযোগে পাহাড়ের বিশাল অংশ কাটা শুরু করা হয়। খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল সেখানে ছুটে যায়। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেয়নি কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার পরিদর্শনে যান। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড় কাটার প্রকৃত অবস্থা
দেখে যাওয়ার ভয়ে বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ঢুকতে দেয়নি কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। অব্যাহত পাহাড় কাটার ফলে ইতোমধ্যে পাহাড়ের বিশাল অংশ সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যাওয়ার আগেই পাহাড় কাটার সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে। কাটা অংশে গাছের ডালপালা রাখা হয়েছে এবং লোহার স্ক্র্যাপ ও গুঁড়ি দিয়ে গর্তগুলো ভরাট করা হয়েছে; যাতে বোঝা না যায়।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই এলাকায় পাহাড় কাটার অপরাধে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। তখন আর কখনো পাহাড় কাটবে না বলে অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু পরের মাস থেকেই রাতে আঁধারে পাহাড় কাটা শুরু করে। দুই বছর ধরে অত্যন্ত গোপনে এবং বিশেষ কৌশলে পাহাড় কাটছিল। বিশেষ করে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্র-শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনে পাহাড় কাটার কৌশল নেয়। ওই এলাকার আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা এতই জোরদার রেখেছে যে, স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় কাজে যেতেও কেএসআরএমের নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের মাধ্যমে ওই এলাকায় একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম বলেন, আমরা পরিদর্শনে এসেছি। পুরো এলাকা ঘুরে দেখছি। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপপরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, আগেও পাহাড় কাটার অপরাধে জরিমানা করা হয়েছিল। আগের এবং সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড় কাটার চিত্র ধারণের পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে এনেছি। সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।