শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীকে বশ করতে তাবিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাইফুল ইসলাম নামের এক মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে করে বিপাকে পড়েন সেই ইমাম।
গতকাল শনিবার নালিতাবাড়ী উপজেলার ১ নম্বর পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারমারী আন্দারস্থ পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ রোববার দুপুরে নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্তল পরিদর্শন করেন।
অভিযোগ উঠেছে, ওই কিশোরীকে বশ করার জন্য তার ফুফাতো ভাই জামাল চেষ্টা করে। অন্তত ৬ মাস আগে ৫০০ টাকার বিনিময়ে তাকে বশ করতে একটি তাবিজ করে দেন আন্দারস্থ পাড়া গ্রামের শান্তির মোড় মসজিদের ইমাম সাইফুল ইসলাম। কিন্তু ওই কিশোরী বশে আসেনি। উল্টো গত ৪ মাস ধরে কিশোরী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
গতকাল শনিবার দুপুরে বারমারী বাজারে পোড়াগাঁও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এ নিয়ে সালিস বসে। সালিসে কিশোর জামাল তাবিজের কথা স্বীকার করে।
ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই ইমাম সাইফুল ইসলাম চেয়ারম্যানের প্রতি অভিযোগ তোলেন, তাকে গোপন কক্ষে নিয়ে চড়থাপ্পড় মারা হয়েছে। মুহূর্তেই চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বারমারী বাজারে উত্তেজনাকর পরিবেশ তৈরি করে। সালিসে উপস্থিত লোকেদের বাড়িঘরে গিয়ে হামলা করে জিম্মি করে রাখে। কাউকে আবার পথরোধ করে হামলা করতে উদ্যত হয়।
ইমাম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কোনো তাবিজ করিনি। মিথ্যা অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান তার গোপন কক্ষে নিয়ে টুটি চেপে ধরে আমার গালে থাপ্পাড় দিয়েছেন।’
তবে কিশোর জামাল জানায়, তার কথামতো ইমাম সাইফুল ৫০০ টাকার বিনিময়ে তাকে বশিকরণের তাবিজ বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তাবিজ উল্টো রি-অ্যাকশন করায় ইমাম সাইফুল পুনরায় তাবিজ দিয়ে ঠিক করার কথা দিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া জানান, চড়-থাপ্পড়রের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ইমাম সাহেব নিজের অপকর্ম আড়াল করতে এখন পাল্টা অভিযোগ তুলছেন। অথচ সালিসনামায় তার দোষের কথা উল্লেখ করে তাকে জিম্মায় নিয়েছে তারই বাবাসহ গণ্যমান্যরা।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, দুই পক্ষেরই লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।