করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের এক চিকিৎসকের রোগী দেখার ঘটনায় বেসরকারি হলি ল্যাব হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তিন সদস্যের কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান ও মেডিকেল অফিসার ডা. ইনজামুল হক।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হলি ল্যাব হাসপাতাল নিয়ে তদন্ত করতে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, যেহেতু ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ হলি ল্যাব হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসা দিয়েছেন। এ কারণে হাসপাতালের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ নন, তাই আমরা সরাসরি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। তবে তার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক) ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ নিয়মিত রোগী দেখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ের হলি ল্যাব হাসপাতাল নামের এক বেসরকারি ক্লিনিকে। দুই দফায় নমুনা পরীক্ষায় ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথের করোনা পজিটিভ হয়। তাই হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে তাকে আইসোলেশনে থাকতে ছুটি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি আইসোলেশনে না থেকে শরীরে করোনাভাইরাস নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন।
গত ২৬ জুন তার পিসিআর ল্যাব পরীক্ষায়ও করোনা পজিটিভ আসে। পরদিন ২৭ জুন তিনি হলি ল্যাব হাসপাতালে চেম্বার করে ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসা করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ তার বেসরকারি চেম্বার ফেলে চলে যান।
এদিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাক্তার শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনা আক্রান্ত থাকায় তাকে আইসোলেশনে থাকতে ছুটি দেয়া হয়েছে। তিনি ছুটিতে গিয়ে যদি আইসোলেশনে না থেকে বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাকে দ্রুত শোকজ করা হবে।