সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বিরুদ্ধে রায়ের ফলে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই ঘটনা এক নেতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই সাজার রায় বিচার বিভাগের ওপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া বিচার বিভাগের ওপর মানুষের ভরসা নষ্ট হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘আজকের প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে ন্যায় বিচার আজ ভূলণ্ঠিত। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ন্যায় বিচার নেই। সত্য বলার অপরাধে প্রধান বিচারপতিকে সাজা দেওয়া হলো। এদেশে সম্মানিত কোনো ব্যক্তিরই সম্মান নেই। এখন কোনো বিচারপতিই সত্য রায় দিতে পারে না। কারণ, সত্য বললে বা সঠিক রায় দিলে তাদেরকে এস কে সিনহার পরিণতি ভোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের দল হিসেবে দাবি করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। বিএনপির পঞ্চাশোর্ধ বয়সের বেশিরভাগ নেতাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এ দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর’লীগের যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা তারা ভারতে পালিয়ে গেলেন। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিলীন করে দিয়েছে। বাকশাল কায়েম করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছিল।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার সম্বলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। এরপর দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন হয়েছিল। আজ আবারও সেই ৭৫-এর মতো বাকশাল তৈরির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গত একযুগ ধরে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে সংকট অনেক গভীরে। স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী আজ কারাগারে। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। হত্যা করা হয়েছে বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে দেশপ্রেমিক সব দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশ ও জাতিকে এই ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে কোথায়ও নিরাপত্তা নেই। ডিজিটাল আইনে মামলা করে রাষ্ট্র ও সমাজে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের বোধশক্তি ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা আজ ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। এর জন্য সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে, ত্যাগ শিকারের জন্য তৈরি থাকতে হবে।