সিট দখলকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হলে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ফয়সাল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে থাকেন। এই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মনিরুল ইসলাম স্বপনসহ তার ২০-২৫ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন। স্বপন একই হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে থাকেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, মনিরুল তার কক্ষে গিয়ে সিট ছেড়ে চলে যেতে বলেন। চলে না গেলে প্রাণে মারার হুমকি দেন এবং আহাদ নামে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীর জিনিসপত্র তার কক্ষে রেখে যান। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে মনিরুল আবার ২০-২৫ জনসহ তার কক্ষে যান।
ভুক্তভোগী বলেন, ‘রাতে আবার মনিরুলসহ ২০-২৫ আমার কক্ষে এসে বলে যে ‘‘তোকে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম? তুই এই রুমে এখনো কি করিস? হল কি তোর বাপের? আমার এই ব্লকে থাকতে হলে আমাকে টাকাপয়সা দিয়ে থাকতে হবে’’। তখন আমি প্রতিবাদ করলে আমার গেঞ্জির কলার ধরে কক্ষ থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি বের না হলে, সবাই এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে মনিরুল লাঠি দিয়ে আমার হাতে সজোরে আঘাত করেন এবং আমার বিছানাপত্র বাহিরে ফেলে দেন।’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘ওই সিটে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের আহাদ নামের এক ছোট ভাইকে অ্যালাট দিয়েছে। তাই তাকে অন্য সিটে যেতে বলা হয়। কিন্তু সে উল্টা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। তখন উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। তবে মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি আমি জানি না। তবে সিট দখল কিংবা মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হলে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হলের প্রাধ্যক্ষ ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার আমি ছুটিতে ছিলাম। রাতে বিষয়টি শোনার পরে আমি দু’পক্ষের সঙ্গেই মোবাইলে কথা বলেছি। অভিযোগকারী ফয়সালকেই ৪০৪ নম্বর রুমে বরাদ্দ দেওয়া আছে। কিন্তু মনিরুল (ছাত্রলীগ নেতা) তৃতীয় তলায় বরাদ্দ দেওয়া আছে, এমন এক ছেলেকে ফয়সালের সিটে ওঠাতে চেয়েছিল। আমি সকালের মধ্যে মনিরুলের ওই ছেলেকে তার বরাদ্দকৃত সিটে (তৃতীয় তলায়) চলে যেতে বলেছি। সকালেও হলে গিয়েছিলাম, কিন্তু অত সকালে ওদের আর ডাকিনি। ফোনে কথা হয়েছে। ওই ছেলে কথা না শুনলে (নিজের সিটে না গেলে) পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকেও কথা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আহাদ সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইরে গেছে, এখনো রুমে ফেরেনি। তবে তার জিনিসপত্র এখনো ৪০৪ নম্বর কক্ষেই আছে।’