সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় মেয়ের জামাইকে ইফতারের থালা ও ঈদের পোশাক না দেওয়ায় সৃষ্ট কলহের জের ধরে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। নিহতের নাম শরিফা বেগম (২০)। গতকাল শনিবার দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা হলে শরিফার স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগমকে আজ রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হাজতে পাঠান।
নিহত শরীফার বাবার নাম শাকিম উল্যা। তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামে বসবাস করেন। শরীফার নিহতের ঘটনায় মামলা করেন তার বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন। তার অভিযোগ, বোনের স্বামীর জন্য ইফতারের থালা ও ঈদের পোশাক না দেওয়ায় তাদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে আরশ আলী ও তার মা মিনারা বেগম শনিবার তার বোনকে নির্যাতন করেন। যে কারণে শরীফার মৃত্যু হয়। একই দিনগত রাত ১০টার দিকে ওসমানীনগর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারের পর আরশ আলী ও মিনারা বেগম দাবি করেছেন, সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা শরিফা আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
৯ মাস আগে উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর পুত্র আরশ আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় শরিফার। অভিযোগ আছে, বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই তার স্বামী-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য শরিফাকে নির্যাতন শুরু করেন। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন শরিফা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের থালা-ঈদের নতুন পোষাক না পাঠানোয় শরিফাকে নির্যাতন করেন আরশ আলী ও মিনারা বেগম। পরে বিষয়টি ইসলাম উদ্দিনকে জানান তার ছোট বোন। পরে বোনের নম্বরে কয়েকবার কল দিলে সেটি বন্ধ পান ভাই।
শনিবার বড় বোন শিপন আক্তার শরিফার স্বামী শাশুড়ীর জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আরশ আলীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে খবর আসে শরিফা আত্মহত্যা করে মারা গেছেন। পরে খবর দেওয়া হলে দুপুরে পুলিশ গিয়ে আরশ আলীর ঘর থেকে শরিফার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শিপন আক্তার বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার বোনের ওপর তার স্বামী ও শাশুড়ি যৌতুকসহ নানা অজুহাতে নির্যাতন করতো। আমরা গরিব মানুষ, লকডাউনের কারণে অভাব-অনটনে চলতি রমজান মাসে ইফতার পাঠাতে দেরি হয়। আরশ আলীর জন্য আলাদা করে সাজানো থালা না দেওয়ায় তিনি তার মাসহ শরিফাকে নানা ভাবে নির্যাতন করে।’
ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক বলেন, ‘নিহতের ভাই সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের পর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।