জাতীয়

ইটভাটায় কাজ করে পড়াশুনা ও সংসার চালান অনার্স পড়ুয়া সুমন

(Last Updated On: )

সুমন রায়। এক ভাই দুই বোন। অভাবের সংসার। মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকু নেই তাদের। ১১ বছর বয়স থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ইটের ভাটায় কাজ করে নিজের পড়াশুনা চালানোর পাশাপাশি ৫ সদস্যের একটি পরিবারের হাল ধরে রেখেছেন ইটের ভাটার উপার্জনে। তিনি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ডুগডুগী গ্রামের প্রভাত রায়ের ছেলে। সৈয়দপুর সরকারী কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের অনার্স পড়ুয়া মেধাবী ছাত্র।

সুমন ইটের ভাটায় একদিন কাজ না করলে তার পরিবার অনাহারে অর্ধাহারে থাকে। নিজের জমি নেই, অন্যের ভিটায় ২টি কুঁড়েঘরে তাদের বসবাস। বাবা দিনমজুর মা গৃহিনী। তাকে পড়াশুনা করানো ও পরিবারের যাবতীয় খরচ চালানো দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ও সরকারি চাকরি করার আশায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়ে তিনি ইটের ভাটায় কাজ করেন। তিনি শুধু কলেজের প্রয়োজনে বছরে দু’একবার বাড়িতে আসেন। নতুবা আসার সুযোগ হয় না।

এ বিষয়ে সুমন রায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বয়স ১১ বছর হলেই তখন থেকে সংসারের অভাব অনটন মেটাতে ও নিজের পড়াশুনার টাকা জোগারের জন্য সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় ইটের ভাটায় কাজ করি। ইটের ভাটার পরিশ্রমে আমার ৫ সদস্যের একটি পরিবারের হাল ধরে রাখতে পারছি। ইটের ভাটার পরিশ্রমের টাকা দিয়ে আমি অনার্স ২য় বর্ষ পর্যন্ত পড়তে সক্ষম হয়েছি। আমার আশা, আমি এভাবে কষ্ট করে পড়াশুনা শেষে একটি সরকারি চাকরি করতে পারবো।’

সোনারায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, ‘পরিবারটি গরীব। সুমন রায় ছোট বেলা থেকে ইটের ভাটায় কাজ করে ও নিজের পড়াশুনা চালায়। নিজের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে সে অনার্স পর্যন্ত পড়তে পারছে। তার বাবা মার পক্ষে সুমনকে লেখাপড়া করানো সম্ভব নয়। তবে আমি যতটুকু পারছি এই পরিবারটিকে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি।’